সুপ্রিয়
পাঠক,
মনোবীণায় আপনাকে
স্বাগতম।
ছেলেবেলা
থেকেই লিখতাম। লেখালেখি
এক সময় নেশায় পরিণত
হয়েছিল। বিশেষ
করে কলেজ জীবনে এই
নেশাটি আমাকে প্রচণ্ডভাবে আবিষ্ট
করে রেখেছিল। ঢাকা কলেজের নর্থ
হোস্টেলে থাকতাম। কিন্তু
কোথায় কলেজ, কোথায় ক্লাস
আর কোথায়-ই বা পড়াশোনা— এসব
নিয়ে বিন্দু মাত্র আগ্রহ
আমার ছিল না।
শুধু কবিতা আর উপন্যাস।
পড়তাম, লিখতাম। চোখে-মুখে কেবল একটি
স্বপ্নই চক চক করত--- অনেক
বড় কবি-সাহিত্যিক হতে
হবে। নাম,
যশ, খ্যাতি অর্জন করতে
হবে।
এভাবে কেটে গেল দুইটি
বছর। ফাইনাল
পরীক্ষার ফরম পূরণ করলাম
না। কারণ
পরীক্ষা দেব না, ফরম
পূরণ করে কী লাভ?
বন্ধুরা যখন পরীক্ষা নিয়ে
ব্যস্ত, আমি তখন নিজের
লক্ষ্যে অটুট থেকে পাণ্ডুলিপি
নিয়ে বিভিন্ন প্রকাশকের কাছে ছুটছি।
জীবন থেকে হারিয়ে গেল
একটি বছর।
আমার একজন প্রিয় শিক্ষক-
শ্রদ্ধেয় ইমান আলী স্যার। আমাকে
খুব স্নেহ করতেন।
স্যার একদিন তাঁর চেম্বারে
ডেকে নিয়ে আমাকে খুব
করে বোঝালেন, "আগে লেখাপড়া করতে
হবে, তারপর সাহিত্য-চর্চা। আগে
ইউনিভার্সিটিতে যাও, তারপর এসব
করার জন্যে অনেক সময়
পাবে।" স্যারের কথায়
কাজ হলো। আমি
লক্ষ্মী ছেলের মতো লেখাপড়া
করে পরের বছর পরীক্ষা
দিলাম আর ভালো রেজাল্টও
করলাম।
কলেজ জীবনে আমি যখন
প্রকাশকদের পেছনে ঘুরে ঘুরে
জুতো ক্ষয় করেছি, তখন
আমার লেখা ছাপা হয়নি। পরে
অবশ্য প্রকাশকদের ভালো লাগা থেকেই
আমার বইগুলো বের হয়েছিল। ইউনিভার্সিটির
শুরুর দিকেই বের হয়
আমার প্রথম বই "অকাল
সন্ধ্যা"। মনে
আছে, সারা দেশ থেকে
পাঁচশ'র ওপরে চিঠি
পেয়েছিলাম। বেশির
ভাগ ছিল মেয়েদের চিঠি। সেই
চিঠিগুলো এখনও আছে,
যত্ন করে রেখেছি।
প্রশংসার বৃষ্টি। আজীবন
আমার কর্ণকুহরে রিম ঝিম করে
বাজতে থাকবে।
যা-ই হোক, ইউনিভার্সিটি
ছাড়ার পর কবি-সাহিত্যিক
হবার ভূতটাও আমাকে ছেড়ে
চলে গেল। তারপর অনেকগুলো
বছর অতিবাহিত হলো, তেমন কিছুই
লিখিনি। আজকাল
লিখতে বড় ইচ্ছে করে। মাঝে
মাঝে বুকের মধ্যে আগুন
জ্বলে ওঠে অথবা প্রচণ্ড
আবেগে চোখে জল আসে। তখনই
লিখতে ইচ্ছে করে।
তাই বানালাম এই মনোবীণা।
আমার মনের বীণায় যে-সুর অনুরণিত হবে,
তা-ই প্রকাশ পাবে
লেখনীতে। এতে লিখব, যখন যা
মন চায়। সাহিত্য,
সংস্কৃতি, বিনোদন, খেলাধুলা, রাজনীতি, সমাজ, অন্যায়, অনিয়ম— এ
সবই হবে আমার লেখার বিষয়বস্তু। তবে
সত্যি বলছি, যশ-খ্যাতির
প্রতি এখন আমার আর কোন
মোহ নেই। সেই
মোহ কেটে গেছে অনেক
আগে। তাই
এখন আমি শুধু আমার
মনের জমানো কথা প্রকাশ
করবার জন্যেই লিখব।
কারণ প্রত্যেক মানুষই তার মনের
কথা প্রকাশ করতে পারলে
অদ্ভুত এক আনন্দ লাভ
করে। আমি
সেই আনন্দটাই পেতে চাই,
আর চাই ফুলের মতো
সুন্দর একটি বাংলাদেশ।
এ ছাড়া আমার চাইবার
আর কিছুই নেই।
আশা করি, আপনারা আমার
সাথেই থাকবেন। আমার
লেখা সম্পর্কে আপনাদের নিরপেক্ষ মতামত জানাবেন।
প্রয়োজনে পরামর্শ দেবেন। আপনাদের
পরামর্শ অনুযায়ী লেখার চেষ্টা করব।
ধৈর্যসহকারে
এই লেখাটি পড়বার জন্যে
ধন্যবাদ।
বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ
শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করুক
বাংলাদেশের
মানুষ পৃথিবীর যে যেখানে আছে
সবাই ভালো থাকুক
অনেক অনেক শুভ কামনা!