Sunday, June 19, 2016

বাবা (কবিতা)





যদি প্রশ্ন কর, ‘কাকে ভালোবাস?’
বলব, ‘বাবা’।  
যদি জানতে চাওয়া হয়, ‘গভীর রজনীতে
একাকী এক আঁধিয়ার ঘরে
যখন দু’চোখে ঘুম আসে না,
তখন কারে জপতপ কর?’
আমি হাসি মুখে সেই জবাব দেব-
‘তিনি শুধুই বাবা।’

বাবা আমার ধ্যান, বাবা আমার জ্ঞান
বাবা আমার মসজিদ, বাবা আমার মন্দির
আমি বাবার পায়ের পাদুকা-নিচে
ক্ষুদ্র-খর্ব ধূলকণা।  

আমি নিঃশব্দে দাঁড়িয়েছি সমুদ্র-সৈকতে
নীলাভ-নীর ভালো লাগে না,
মানসপটে ভেসে ওঠে বাবার ছবি।
তরঙ্গমালার তর্জন-গর্জন
আমার কর্ণকুহরে প্রবেশ করে না,
শুধু শুন্‌তে পাই বাবার কথার প্রতিধ্বনি।

আমি নরকের আগুন দেখিনি
দেখেছি জনকের মলিন বদন,
সে-বদন আমাকে জ্বালায় নরকের অগ্নির মতো।
আমি স্বর্গের ফুল দেখিনি
দেখেছি বাবার মুখের হাসি,
সে-হাসি আমার কাছে স্বর্গের ফুলের মতো।

যাঁর জন্যে আমি শরীরের শেষ রক্তবিন্দুও
অবলীলায় ঝরাতে পারি,
তিনি বাবা।
হৃদয়ের তন্ত্রী ছিঁড়ে যে ভালোবাসার আকুতি,
তা শুধুই বাবার জন্যে।

যাঁকে রাজাধিরাজ বানাতে গিয়ে
এই দুরন্ত বিশ্বরণাঙ্গনে
আমি বার বার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হই,
তিনি ‘বাবা’ নামের দেবতা।         
আমি বাবা-দেবতার চরণ-তলে
খুঁজি জান্নাতের সুখ।
............................................................
কাব্যগ্রন্থঃ ঝরাফুল
প্রকাশকালঃ একুশে বইমেলা, ২০০৪           
............................................................
বিশেষ দ্রষ্টব্য: পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে নিচের সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং বাটনগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এই ব্লগের ধারাবাহিক পোস্ট সম্পর্কে আপডেট পেতে আপনি আমার ফেসবুক পেইজে (https://www.facebook.com/ihtareq1971) লাইক দিয়ে নোটিফিকেশান অন রাখুন। এই পোস্টে ইতিবাচক মন্তব্যের জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।